ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের স্বরূপ অনুসন্ধান এবং আমার ভাবনা
গত প্রায় দেড় মাস ধরে চলা ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ চলছে। মারা গেছে এবং যাচ্ছে হাজারো সাধারণ মানুষ। শুধু এক বেলার হামলায় ইসরায়েলে মারা গেছে প্রায় ১৫০০ মানুষ, জিম্মি প্রায় আড়াইশো। এরপর গত দেড় মাসে গাজায় মারা গেছে প্রায় বারো হাজার, আহত অগুনতি। মানুষের জীবনের কি নিদারুণ অপচয়।
পুরো ব্যাপারটা নিয়েই মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে অনেক প্রশ্ন। সেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে পুরো ঘটনাটা নিয়ে আমার একান্ত নিজস্ব কিছু অবজারভেশনঃ
১) হামলাটা হামাস করলো কেন?
-উত্তরটা জিওপলিটিক্যাল এবং স্বাভাবিকভাবেই অনেক অনেক ফ্যাক্টর জড়িত। মেজর কয়েকটা নিয়ে বলার চেষ্টা করি এবং সেগুলাও একটা অন্যটার সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।
বর্তমানে ইন্দো-প্যাসিফিক এরিয়া থেকে ইউরোপ যাওয়ার জন্য যে ইকোনকিম রুট ব্যবহার করা হয় সেটাকে আমরা স্ট্যান্ডার্ড রুট নামে বলবো (এই নামেই পরিচিত)। এই রুট ভারত থেকে শুরু হয়ে ইউরোপ হয়ে রাশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত। বানিজ্যের জন্য বিশ্ববিখ্যাত সুয়েজ খালও এই রুটেরই একটা অংশ। এই রুট দিয়ে হামেশাই প্রচুর ট্রেড হয়, হচ্ছে এবং স্বাভাবিকভাবেই আমেরিকা এখান থেকে অনেক লাভবান হয়। এই রুটে ভারত থেকে ইউরোপ যাওয়ার রাস্তা মোটামুটি ৭২০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি। যদি সুয়েজ খাল না থাকতো এবং এই পথ বাদ দিয়ে সমুদ্র পথে পুরো ঘুরে ইন্দো প্যাসিফিক এরিয়া থেকে ইউরোপ যেতে হতো তাহলে সেই রাস্তার দৈর্ঘ্য দাঁড়ায় প্রায় ১২০০০ কিলোমিটার। ঠিক এই কারণেই সুয়েজ খাল বৈশ্বিক বানিজ্যে এতো গুরুত্বপূর্ণ এবং এতো এতো পাওয়ারফুল দেশ এটার কন্ট্রোল নেওয়ার জন্য চেষ্টা করে।
Current Standard Economic Corridor (Blue) and Proposed NSTC Corridor (Red)
Summit of Iran, Russia and other countries on NSTC finalization
সমস্যা হচ্ছে, এই রুটটাও অনেক ঘুরানো পথ এবং অনেক বেশি সময় লাগে মালামাল পরিবহনে। তো, সময় বাঁচানো এবং নিজেদের কর্তৃত্ব রাখা-দু দিকেই যেন ভারসাম্য করা যায় এই লক্ষ্যে চায়না, রাশিয়া, ভারত, ইরান এরা বিকল্প একটা রুট চালু করে যেটা NSTC (North South Transport Corridor) নামে পরিচিত। এই রুটের কাজ শুরু হয় আরও অনেক আগে। ২০০০ সালের দিকে এই রুটের ব্যাপারে প্রথম প্রস্তাবনা আনা হয় এবং ২০০২ সালে রাশিয়া, ভারত এবং ইরান এই রুট সংক্রান্ত একটা প্রিলিমিনারি এগ্রিমেন্টে সাইন করে। তিন বছর পর ভাইজানও (আজারবাইজান) এই চুক্তিতে যুক্ত হয়।
এই রুটটা যেহেতু ইরান এবং রাশিয়ার মধ্য দিয়ে গেছে এবং আমেরিকার সাথে এই দুইটি দেশের সম্পর্ক একেবারেই সাপে নেউলে, তাই, আমেরিকাও প্রচলিত স্ট্যান্ডার্ড ইকোনমিক করিডোরের বিকল্প একটি রুটের পরিকল্পনা করে যেটা যাবে মিডল ইস্ট, ইজরায়েল হয়ে ইউরোপ পর্যন্ত। ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলের স্টার্টিং পয়েন্ট হিসেবে এই সবগুলা রুটই ভারত থেকে শুরু হয়। আমেরিকার পরিকল্পিত এই রুটের নাম IMEC (India-Middle East-Europe Economic Corridor)। এটা ভারত থেকে শুরু হয়ে আরব আমিরাত, সৌদি আরব, জর্ডান, ইজরায়েল হয়ে ইউরোপ পর্যন্ত বিস্তৃত। পর্যায়ক্রমে থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশও এই রুটের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সমস্যা হচ্ছে, এই রুটটা যেহেতু ভারতকে সরাসরি মিডল ইস্ট এবং ইউরোপের সাথে যুক্ত করে এবং ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলের সাথে মিডল ইস্ট এবং ইউরোপের বানিজ্য অনেক বেশি, তাই, এটা তুলনামূলক সুবিধাজনক এই অঞ্চলের দেশগুলোর বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য। হামলার জাস্ট আগের মাসেই (গত সেপ্টেম্বরে) দিল্লীতে হওয়া G20 summit এ এই রুট ব্যবহার সংক্রান্ত চুক্তির MOU সাক্ষর করে সংশ্লিষ্ট দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা।
Proposed IMEC Corridor
এতো বড় একটা অর্থনৈতিক প্ল্যান নিশ্চয়ই এক দিনে হয় না, তাই না? এটাও হয়নি। এই রুট প্ল্যানিং এর কাজ শুরু হয়েছে অনেক আগেই। যেকোনো দ্বিপাক্ষিক বানিজ্যের অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল অঞ্চলের মধ্য দিয়ে হওয়া একটা ইকোনমিক করিডোরকে লাভজনক বা জনপ্রিয় করা খুবই কঠিন বৈকি। এখানেই IMEC রুটটা ধরা খেয়ে যায় কারণ, মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ দেশের সাথে ইজরায়েলের সম্পর্ক ভালো না। তাই, গত প্রায় ১০-১৫ বছর ধরেই মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সাথে ইজরায়েলের সম্পর্ক উন্নতির লক্ষ্যে আমেরিকা কাজ করে যাচ্ছে, যেটা সম্ভবত সবাই খেয়ালও করেছেন। ইতমধ্যে আরব আমিরাতের সাথে সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে, মিশর, জর্ডানের সাথেও সম্পর্ক স্বাভাবিক। সৌদি আরবের সাথে গত অনেক বছর ধরেই কথাবার্তা চলছে। এমনকি টু-স্টেট তত্ত্বেও ইজরায়েল-সৌদি আরব অনেকটা ঐক্যমত্যে পৌঁছেছিলো। মাত্র কিছুমাস পর, আগামী বছরের মাঝামাঝি IMEC সম্পর্কিত একটা চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা। এই IMEC রুটটা হলে স্বাভাবিকভাবেই NSTC রুটের গুরুত্ব অনেকটাই কমে যাবে।
Israel-Saudi Arab normalization talk
Israels’s thought about normalization and two-state solution
ধরতে পারছেন পানি কোনদিকে গড়াচ্ছে?
এই এক হামলা দিয়ে পুরো ব্যাপারটাকেই জিওপার্ডাইজ করে দেয়া হলো। যদিও সেই অঞ্চলে ইজরায়েলের সাথে ঝামেলা লেগেই আছে, কিন্তু, সেসব টুকটাক ঝামেলা কোন কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চেস্টাকে সেভাবে প্রভাবিত করে না। তাই, বছরব্যাপী প্ল্যানিং করে এমন হামলা করা হলো যেন সেই হামলার বিপরীতে ইজরায়েল সর্বোচ্চ প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং সেটাকে কাজে লাগিয়ে পুরো মুসলিম বিশ্বকেই যেন ইজরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের বিপরীতে দাঁড় করিয়ে দেয়া যায়। হচ্ছেও সেটাই। তারা পুরোপুরি সফল তাদের উদ্দেশ্যে। মাঝে দিয়ে পলিটিক্যাল মারপ্যাঁচে পড়ে মার খাচ্ছে সাধারণ গাজাবাসী।
২) এই হামলায় কারা লাভবান হলো সবচেয়ে বেশি?
-সহজ উত্তর, ইরান এবং রাশিয়া। যেকারণে দেখতেই পাচ্ছেন, হামলার দিন থেকেই ইরান খুবই ভোকাল এই হামলার ব্যাপারে। এই হামলার কারণে IMEC রুটের বাস্তবায়ন কম করে হলেও কয়েক বছর পিছিয়ে গেলো। মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-সৌদি আরব দ্বন্দ্ব সবসময়ই চলে আসছে এবং ইরান সৌদি আরবের তুলনায় নিজেদের কর্তৃত্ব বাড়াতে সবসময়ই চেষ্টা করে। IMEC এর বদলে NSTC রুটটা যদি জনপ্রিয় হয়, তাহলে সেই রুটের একটা মেইন পয়েন্ট হিসেবে ইরানের গুরুত্বও বৃদ্ধি পাবে সেই অঞ্চলে (IMEC ক্ষেত্রে যেটা ছিল সৌদি আরব)।
৩) হামাস কি জানতো না যে, ইসরায়েল এতো ব্যাপকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে?
-প্রথম পয়েন্টেই এটা উল্লেখ করেছি। হামাসের নেতারা সেটা জানতো, ভালোভাবেই জানতো। এবং, তারা চেয়েছিলোও এক্সেক্টলি এটাই। ইসরায়েল যতো বেশি প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সাধারণ মানুষের যতো বেশি প্রাণহানি হবে, হামাসের ততোই লাভ। মানবিক বিপর্যয়কে পুঁজি করে তারা সারা বিশ্বে বিক্ষোভের আয়োজন করবে। হতাহতের পরিমান যতো বেশি হবে, সেগুলোকে পুঁজি করে বিক্ষোভও ততো জোরদার হবে। এই ব্যাপারটা সবাই অলরেডি দেখছেন পুরো বিশ্বেই।
সুতরাং বলা যায়, এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি ইরান এবং হামাসের অনুকূলেই আছে। একবেলার হামলায় ১৫০০ লোক মেরে ফেলা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর হওয়া সবচেয়ে বড় হামলার প্রতিক্রিয়ায় হওয়া ইজরায়েলের হামলাকে সাইকোলজিক্যালি কাজে লাগানো, ২৫০ জিম্মি নিয়ে তাদেরকে পুঁজি করে নেগোশিয়েট করা থেকে শুরু করে তারা যেভাবে যা চেয়েছিল সব এখনো সেভাবেই হচ্ছে।
৪) হামাসের বিরুদ্ধে করা হামলায় হামাস মরার বদলে সাধারণ মানুষ মরবে কেন?
-হামাসের যোদ্ধারা বিভিন্ন লোকালয়, বাসা-বাড়ি, পাবলিক স্থাপনা (স্কুল, মসজিদ, হাঁসপাতাল) এগুলোকে তাদের সামরিক অবকাঠামো হিসেবে করে। সুতরাং, হামাসের বিরুদ্ধে হামলা করতে গেলে সেই হামলাটা লোকালয়েই হয়। এবং, স্বাভাবিকভাবেই তখন ১ জন হামাস মেম্বারের বিপরীতে সাধারণ মানুষ মারা যায় ১০ জন। আইসিসও একই কাজ করতো এবং এর ফলে, আইসিসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাটা ছিল খুব কঠিন।
হামাস, আইসিসের মতো সংগঠনের সাথে অন্য যেকোনো সামরিক বাহিনীর পার্থক্য এখানেই। বাংলাদেশ বলেন, ভারত বলেন, বা, আমেরিকা, রাশিয়া, ইজরায়েল বলেন, এগুলোর সামরিক বাহিনী প্রথমে তার সাধারণ নাগরিককে যুদ্ধের বাইরে রাখতে চায়, যুদ্ধক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিক যাতে না থাকে সেটা আগে নিশ্চিত করতে চায়। আর, অন্যদিকে হামাস, আইসিস এরা সাধারণ মানুষকে তাদের নিরাপত্তার জন্য ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। লোকালয়কেই তাদের যুদ্ধক্ষেত্র বানায়। সাধারণ মানুষের মৃত্যুকে পুঁজি করে এরা বিক্ষোভ আর জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করে, অথচ তারা নিজেরা সবসময়, সব জায়গাতে সাধারণ মানুষের উপরেই তাদের হামলাগুলো করে।
আরেকটা ব্যাপারে এই পয়েন্টটা সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারণা পাবেন। যেকোনো বন্ধী বিনিময় চুক্তিতে দেখা যায়, জাস্ট ১ জন ইজরায়েলীকে মুক্তির বিনিময়ে শত শত, এমনকি হাজার ফিলিস্তিনিকে মুক্তির দেয়ার জন্যেও ইজরায়েল রাজী হয়ে যায়। জীবন কখনো অংকের বিনিয়মে হিসেব হয় না, কিন্তু, জাস্ট উদাহরণের খাতিরে বললেও বলা যায়, ইজরায়েলীরা তাদের একজন নাগরিকের জীবনকে শতজন শত্রুর জীবন থেকেও বেশি প্রাধান্য দেয়।
৫) যুদ্ধটা হামাস শুরু করলেও তারা গাজাবাসীদের সাহায্য করছে না কেন?
-সিম্পল, তাদের সাহায্য করার ইচ্ছা নাই। হামাস লিডারের একটা ভিড়িও দেখলাম যেখানে তাকে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়েছিলো যে, “আপনাদের এতো বিস্তৃত টানেল নেটওয়ার্ক আছে, সেগুলো ব্যবহার করে আপনারা কেন গাজাবাসীকে হামলা থেকে রক্ষা করছেন না?”। তার সরাসরি উত্তর ছিল, “টানেলগুলো হামাস যোদ্ধাদের ব্যবহারের জন্য, গাজাবাসীর জন্য নয়। আর, গাজাবাসীদেরকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব নয়। দখলদার বাহিনী হিসেবে ইজরায়েলী বাহিনীর দায়িত্ব গাজাবাসীদের রক্ষা করা”।
ফিলিস্তিনের নাগরিকরা নিজেরা যে দলকে তাদের সরকার হিসেবে মনোনীত করছে সে দলের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতার এমন বক্তব্য খুবই হতাশাজনক। অন্য কোন দেশের নির্বাচিত সরকারের পক্ষ থেকে কে যদি বলতো যে, আমার দেশের নাগরিককে নিরাপত্তা দেয়া আমার কাজ না, তাহলে প্রতিক্রিয়া কেমন হতো?
মুসলিম ভ্রাতৃত্ব নিয়ে আমরা অনেক কথাইতো বলি, অথচ রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক লাভের জন্য লাখ লাখ মুসলমানকে বিপদে ফেললো আরেক মুসলিম দেশ ইরান, তাও আবার সেই অঞ্চলেরই জনগণ সমর্থিত দলকে ব্যবহার করে। কি নিদারুণ আয়রনি!
গুরুত্তপূর্ণ লিঙ্ক সমূহ। এই নিউজ আর্টিকেলগুলোর বেশিরভাগই হামলার আগে লেখা। সুতরাং, হামলার পর নিজেদের সুবিধামতো ব্যাখ্যা করছে এমন ভাবার দরকার নাই।
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হলো “বাংলাদেশ ব্যাংক” । তাদের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনারত সব ব্যাংক এর তথ্য রয়েছে । বিভিন্ন মেয়াদী অ্যাকাউন্ট এর জন্য কোন ব্যাংক এর সুদের হার কতো, তার বিস্তারিত তথ্য পাবেন সেখানে (সূত্রঃ ১) । মজার ব্যাপার হলো, “সুদমুক্ত” নয়, “সুদযুক্ত” ব্যাংকের সেই তালিকায় ইসলামী ব্যাংকের নামও তালিকাভুক্ত আছে ! এই ট্র্যাডিশনাল ব্যাংক এর লিস্টে তাদের কাজ কি? শুভঙ্করের ফাঁকিটা বুঝতে পারছেন? আর, অতি সম্প্রতি তারা বাংলাদেশের রাস্ট্রায়ত্ব একটি ব্যাংক থেকে
গত ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া এমনকি কিছু খবরের কাগজেও এমন খবর দেখা যাচ্ছে যে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই জয়ের ব্যাপারে নাকি আরও প্রায় ১৫ বছর আগে সিম্পসন কার্টুন সিরিজের একটা পর্বে ভবিষ্যতবানী করা হয়েছিল । অন্য সব কন্সপাইরেসি থিওরির মতোই এটাও সারা বিশ্বের মানুষই লুফে নিয়েছে । ফেসবুকের এক সেলিব্রেটি লেখকও এটা নিয়ে লিখে ছয় হাজারেরও অধিক লাইক এবং হাজারের উপরে শেয়ার এবং কমেন্ট কামিয়ে নিয়েছেন । তিনি আরও এক ডিগ্রি বেড়ে এখানে ইলুমিনাটি, বুশ, এইডস, ইবোলা,
ডিপ ওয়েব এবং ডার্ক ওয়েবকে অনেকেই এক করে ফেলে, কিন্তু এই দুটো মোটেও এক না । এটা অনেকটা “সকল ক্ষারই ক্ষারক, কিন্তু সকল ক্ষারকই ক্ষার না” ধরণের । সকল ডার্ক ওয়েব ডিপ ওয়েবের অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু ডিপ ওয়েব মানেই ডার্ক ওয়েব না । এবং ডিপ ওয়েবের মোট সাইজের তুলনায় ডার্ক ওয়েবও মাত্র ১ ভাগ বা তারও কম । আরেক ধরণের ওয়েবের কথা যেটাকে সে নাম দিয়েছিল “শ্যাডো ওয়েব” যেটা পরবর্তীতে পরিচিতি পায় লাইভ অত্যাচার, খুন, ধর্ষণ দেখানোর জায়গা হিসেবে । অথচ পুরো ব্যাপারটিই ছিল একটা বানানো গল্প যেটা তার লেখাটি পড়লেও সহজেই
করোনাভাইরাস এর ব্যাপারটা যখন প্রথম ব্যাপকভাবে গণমাধ্যমে আসতে শুরু করে, তখন New York Post এর একটা পোস্টে করোনাভাইরাসটি চায়নার উহানের একটি গবেষণাগার থেকে লিকড হয়েছে বলে একটি খবর প্রকাশ করা হয়। তাদের যুক্তি ছিল, পুরো চায়নাতে নভেল করোনাভাইরাস এর মতো এডভান্সড ভাইরাস নিয়ে কাজ করে এমন একটিমাত্র “মাইক্রোবায়োলজি ল্যাব” আছে এবং সেটি উহানে অবস্থিত। যেহেতু উহান থেকেই রোগটা ছড়িয়েছে, সুতারাং, COVID-19 ভাইরাসটিও সম্ভবত সেই ল্যাব থেকেই লিক হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল জার্নাল Nature এ মার্চের ১৭ তারিখ
একটা শতাব্দী প্রাচীন প্রশ্ন । কেউ বলে ডিম ছাড়া মুরগি কিভাবে আসবে । কেউ বলে মুরগি ছাড়া ডিম কিভাবে আসবে ! দুটোই যৌক্তিক প্রশ্ন । কিন্তু, উত্তর কি দুটো? না । আমরা এই উত্তরটাই আজ খোঁজার চেষ্টা করবো । ডিমের মাধ্যমে বাচ্চা উৎপাদন করে এমন প্রাণী মুরগির আগেও আরও অনেক আছে । অর্থাৎ, সঠিক প্রশ্নটা হচ্ছে, মুরগি আগে নাকি মুরগির ডিম আগে । এই ক্ষেত্রে আমাদের বিবর্তনের কার্যপ্রক্রিয়া বোঝা জরুরী । বিবর্তনের মাধ্যমে একটা প্রাণী থেকে আরেকটা প্রাণীর বিবর্তন হয় তাদের জীনে পরিবর্তনের মাধ্যমে ।